চট্টগ্রামে মাদ্রাসা থেকে শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

Anweshan Desk

Anweshan Desk

১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৪১ পিএম


চট্টগ্রামে মাদ্রাসা থেকে শিশুর ঝুলন্ত  মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানার মেহেদীবাগের মেহেদী টাওয়ারে অবস্থিত দারুস সুফ্ফাহ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শৌচাগার থেকে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে  খবর পেয়ে চকবাজার থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়।

ছবি : চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিহত শিশু শাবিব সায়হান

গতকাল  সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শাবিব সায়হান ওই মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির অনাবাসিক ছাত্র ছিল। কিছুদিন আগে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার শিশু কিশোর ম্যাগাজিন 'কিশোর আলো' আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃতও হয়েছিল।তার বাবার নাম মশিউর রহমান চৌধুরী। শিশুটি নগরীর দামপাড়া পল্টন রোডের আবদুল কাদের চৌধুরী বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকত।সাবাবের গ্রামের বাড়ী কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায়।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে শিশুটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে এ ঘটনার পর মাদ্রাসাটির এক শিক্ষকের পালিয়ে যাওয়া এবং সাবাবের গলায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত করছে পুলিশ। একইসঙ্গে কীভাবে বেল্ট সেখানে লাগানো হলো এবং গলায় ফাঁস পড়ল, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।

ছবি : নিহত শিশু শাবিব সায়হান

নিহত শিশুর বাবা মশিউর রহমান বলেন, প্রতিদিন আমি আমার ছেলেকে সকালে মাদ্রাসায় দিয়ে আসি আর সন্ধ্যায় বাসায় নিয়ে যাই। আজ সন্ধ্যায় মাদ্রাসায় গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও ছেলে নিচে না নামলে আমি শিক্ষকদের ফোন দিই এবং তারা বলে যে  পাঠাচ্ছি। আরেকজন বলে বাথরুমে গেছে, চলে আসবে। এভাবে প্রায় ২০ মিনিট পর এক ছাত্র উপর থেকে আমাকে বলে আঙ্কেল তারাতাড়ি উপরে আসুন সাবাবের অবস্থা ভালো না। তখন আমি দৌড়ে ৩য় তলা পর্যন্ত গিয়ে দেখি তারা আমার ছেলেকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে হাসপাতালে নিচ্ছে। জানতে চাইলে বলে গলায় ফাঁস দিয়েছে।

তখন দ্রুত তাকে পার্শবর্তী ম্যাক্স হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসকরা জানায় আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। মশিউর রহমান বলেন, আমার এই ছোট ছেলে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। আমি তার গলায় ও মুখে গালে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। আমি সকালে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় ওকে মাদ্রাসায় দিয়ে গিয়েছি। আমি তাৎক্ষনিক বিষয়টি ডিসি হেডকোয়াটারকে জানিয়েছি।

প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্ররা জানিয়েছে, শাবিবের পাঞ্জাবি বাথরুমের মেঝেতে পড়ে ছিল। টয়লেটের টাওয়াল ও কাপড় রাখার স্টিলের স্ট্যান্ডের সঙ্গে কোমরের বেল্টে ঝুলেছিল শাবিব।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের মজুমদার বলেন, 'শিশুটি মাদ্রাসার শৌচাগারে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে অস্বাভাবিক কিছু পাইনি এখনো। তবে তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিশুটির ময়নাতদন্ত হয়েছে আজ। রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।'

'শিশুটির বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। আমরা আলামত হিসেবে কিছু জিনিস জব্দ করেছি। তবে এখনো এই ঘটনায় কাউজে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়নি', বলেন ওসি।

 


Link copied