নিউইয়র্কে লেখক সালমান রুশদি আক্রান্ত, ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা
১২ অগাস্ট ২০২২, ১২:৫৯ পিএম

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম নিউইয়র্কে একটি বক্তৃতা দেয়ার আগ মুহূর্তে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। খবর এপির।
বার্তা সংস্থাটি নিউ ইয়র্কের প্রেস রিপোর্টারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পশ্চিম নিউইয়র্কের শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সেমিনারে রুশদি যখন বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলেন হঠাৎ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক দুর্বৃত্ত লেখক রুশদির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘাড়ের উপরে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। দ্রুতগতিতে আয়োজকরা ছুটে এসে রুশদিকে রক্ষার চেষ্টা করে এবং দ্রুত গতিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আক্রমণকারীকে নিবৃত্ত করার পর গ্রেফতার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশ এই ঘটনার বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১২ আগস্ট স্থানীয় সময় সকাল এগারোটার দিকে এক সন্দেহভাজন দুর্বৃত্ত মঞ্চে উঠে এসে রুশদি এবং মঞ্চে উপবিষ্ট অন্য একজন আলোচককে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে রুশদির ঘাড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর অবস্থা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। আহত অন্য আলোচকের মাথায় সামান্য আঘাত লেগেছে। ইভেন্টের সাথে যুক্ত একজন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোকুল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, সালমান রুশদী এখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি।
রিটা ল্যান্ডম্যান নামের একজন চিকিৎসক যিনি হামলার পরপর শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটিশনে সালমান রুশদীকে চিকিৎসা দিয়েছেন জানিয়েছেন, " তাঁর শরীরে তিনি কয়েকটি ছুরিকাঘাত দেখেছেন। এর মধ্যে একটি আঘাত ছিল ঘাড়ের ডান দিকে। তিনি আরও বলেছেন, মঞ্চে তার শরীরের নীচে অনেক রক্ত জমে ছিল। তিনি তখনো জীবিত বলেই মনে হচ্ছিল। লোকজন চিৎকার করে বলছিল, এখনো তার পালস পাওয়া যাচ্ছে, পালস পাওয়া যাচ্ছে।"
'স্যাটানিক ভার্সেস' বইটি প্রকাশের পর থেকে লেখক সালমান রুশদী অব্যাহতভাবে মৃত্যু হুমকির মুখে আছেন। অনেক মুসলিম এই বইটিতে তাদের ধর্মের অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন।
রুশদির বই "দ্য স্যাটানিক ভার্সেস" ১৯৮৮ সাল থেকে ইরানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কারণ অনেক মুসলমান এটিকে ইসলাম ধর্মের জন্য অবমাননাকর বলে মনে করে। এক বছর পর, ইরানের প্রয়াত নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি রুশদির হত্যার ফতোয়া জারি করে। যে কেউ রুশদিকে হত্যা করবে তার জন্য তিন মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলারের পুরস্কারের ঘোষণা দেয় ইরানের উগ্রপন্থী ওই নেতা।
রুশদি সেই সময় সেই হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন করে বলেছিলেন যে তাকে হত্যা করার বিনিময়ে পুরস্কার গ্রহণে মানুষের আগ্রহের কোনো প্রমাণ নেই।
সেই বছর, রুশদি ফতোয়া সম্পর্কে একটি স্মৃতিকথা "জোসেফ অ্যান্টন" প্রকাশ করেন।