কেন শুধু মেয়েরা ‘গার্হস্থ্যবিজ্ঞান’ পড়বে?

Anweshan Desk

Anweshan Desk

০৯ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২০ পিএম


কেন শুধু মেয়েরা ‘গার্হস্থ্যবিজ্ঞান’ পড়বে?

রাহাত আরা সরকার, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যতম বৃহৎ জাতীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রধান কাজ হলো বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, উন্নয়ন, নবায়ন, নিরীক্ষণ ও সংস্কার। এনসিটিবি অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তকগুলো আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম পরিচালনার সর্বাধিক পরিচিত মাধ্যম।

অথচ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তকগুলোর তালিকা লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই, কৃষিশিক্ষা বইটির বিকল্প হিসেবে মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বইটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু স্কুলে অবশ্য সব শিক্ষার্থীকেই কৃষিশিক্ষা পড়ানো হয়। গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বইটিতে যেসব বিষয়বস্তু পড়ানো হয়, মোটাদাগে সেগুলো হলো গৃহ ব্যবস্থাপনা, শিশুর বর্ধন ও বিকাশ, খাদ্য প্রস্তুত ও পরিবেশন, পোশাকের শিল্প উপাদান, পোশাকের যত্ন ও পরিপাট্যতা।

বিষয়বস্তুগুলো দেখে মনে হচ্ছে, সচেতনভাবেই মেয়েদের জন্য ‘জেন্ডার রোল’ ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এ বিষয়গুলোকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় কিছু মৌলিক দক্ষতার একটি ‘সেট’ বলা যায়। যে দক্ষতাগুলো ছেলে-মেয়ে উভয়েরই অর্জন করা উচিত। তাহলে মেয়েদের জন্য কেন আলাদা করে গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বই অনুমোদন দিতে হবে? এ বইয়ের মাধ্যমে কি এ ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে না যে গৃহস্থালিকাজে পুরুষের কোনো দায় নেই; বরং নারীদেরই সব দায়িত্ব?

শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের সুযোগ পেলে আমি মেয়েদের জন্য অনুমোদিত গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বইটি পাঠ্যপুস্তক তালিকা থেকে বাদ দিয়ে কৃষিশিক্ষা ও গার্হস্থ্যবিজ্ঞান—দুটি বইয়ের বিষয়বস্তুকে এক করে একটি বই অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা করতাম। যে বই মূল বিষয় হিসেবে সব শিক্ষার্থীর শিক্ষণ-শিখন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

লেখক : রাহাতা আরা সরকার, শিক্ষার্থী,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 

 

 

 


Link copied