হেযবুত তওহীদ পাবনা কার্যালয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা নিহত এক

Anweshan Desk

অন্বেষণ ডেস্ক

২৫ অগাস্ট ২০২২, ১৫:৩৯ পিএম


হেযবুত তওহীদ পাবনা কার্যালয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা নিহত এক

হেযবুত তওহীদ পাবনা কার্যালয়ে মুসলমান সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলায় একজন নিহত

 

গত ২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে আটটার দিকে হেযবুত তওহীদের পাবনা কার্যালয়ে হেযবুত তওহীদ সংগঠনের সদস্যদের উপর আকস্মিক হামলা চালায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। উক্ত ঘটনায় সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন হেযবুত তওহীদের একজন কর্মী, এছাড়াও হামলার কারণে আরো দশজন কর্মী আহত হন। এই বর্বোরচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদ।

এতে মূল বক্তব্য দেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির গণমাধ্যম সম্পাদক এস এম শামসুল হুদা। আরো বক্তব্য দেন গুলশান শাখা সভাপতি গোলাম রব্বানি, যাত্রাবাড়ি শাখা সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ খান, মিরপুর শাখা সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, মতিঝিল শাখা সভাপতি মেসবাহ উল ইসলাম প্রমুখ। তারা এই ন্যাক্কারজনক হামলায় জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানান। 

পাবনা শহরের চরঘোষপুর ৮ নং ওয়ার্ডের ভাটামোড় অবস্থিত কার্যালয়ে জেলা সভাপতি সেলিম শেখ আন্দোলনের ১৫/১৬ জন সদস্যকে নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করছিলেন। হঠাৎ করে ‘হেযবুত তওহীদের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, খ্রিষ্টানের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ 'নারায় তাকবির আল্লাহুয়াকবার' শ্লোগান দিতে দিতে কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে একদল সশস্ত্র হামলাকারী। তাদের হাতে ছিল ধারালো চাপাতি, হাঁসুয়া, রাম দা, লাঠিসোটা, জিআই পাইপ, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। কোনো কথা না বলে তারা বৈঠকে উপস্থিত সবার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে থাকে। 

ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দশজন সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হন যাদের মধ্যে একজন পরবর্তীতে মারা যান। রাতেই দুজনকে জরুরি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে মো. সুজন (৩৩) রাত আড়াইটায় সময় মারা যান এবং গুরুতর আহত আমিনুল ইসলাম (২৭) সেখানে আইসিইউ-তে রয়েছেন, যার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন  আলামিন শেখ (২৭) ও সেলিম শেখ (৪১)সহ অন্য ছয়জন। 

হেযবুত তওহীদের পাবনা জেলা কার্যালয়ে প্রবেশকারী হামলাকারীদের সংখ্যা প্রায় ৪০/৫০ জনের মত ছিল। তবে কার্যালয়ের বাইরেও আরো অনেক সন্ত্রাসী অবস্থান করছিলো। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা তৎক্ষণাৎ পাবনা সদর থানায় ফোন করে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পৌঁছাতে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা লেগে যায়। পুলিশ পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জেলা সভাপতি সেলিম শেখ বাদি হয়ে চিহ্নিত ১৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে রাতেই মামলা দায়ের করেন। 

আসামীরা হচ্ছে- 

১) মো. আলাল (৪৮), পিতা- মৃত হারেজ শেখ, 

২) মো. আল আমিন (২২), 

৩) মো. এনামুল শেখ (২০), উভয় পিতা-মোঃ আলাল শেখ

৪) মো. ইমরান মোল্লা (১৯), পিতা মৃত ইমারত মোল্লা,

৫) মো. বাপ্পি (১৮), পিতা মো. রাসেল ওরফে ভোলা শেখ,

৬) মো. মারুফ শেখ (২৫), পিতা মো. আছব শেখ,

৭) মো. রাসেল ওরফে ভোলা শেখ (৩৫), পিতা মৃত আফা শেখ,

৮) মো. হোসাইন (৩০), পিতা মো. বাদশা শেখ,

৯) মো. বকুল শেখ (৩০), পিতা মো. আনছের শেখ,

১০) মো. শান্ত (২২), পিতা মো. জালাল শেখ,

১১) মো. আজিম শেখ (৩২), পিতা মো. জুলমত শেখ,

১২) মো. সুমন শেখ (৩২), পিতা: মোঃ  উম্মত শেখ,

১৩) মো. শিমুল মন্ডল (৩৫), পিতা মো. ফজুল মণ্ডল,

১৪) মো. রাফিক ডাক্তার (৪৫), পিতা মৃত রওশন মণ্ডল 

মানববন্ধনে হেযবুত তওহীদ কেন্দ্রীয় কমিটির গণমাধ্যম সম্পাদক এস এম শামসুল হুদা বলেন, ‘হেযবুত তওহীদ যেহেতু জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তাই বেশকিছুদিন থেকেই আমরা উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের একটি হামলার ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়ে আসছিলাম। তারা বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন থেকে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলো এবং অপপ্রচারমূলক মিথ্যা বক্তব্যসংবলিত হ্যান্ডবিল এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছিল। এর প্রেক্ষিতে গত মাসেই আমরা পাবনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। সাধারণ ডায়েরি নং-৩৯৭, তারিখ: ০৬/০৭/২০২২। প্রশাসন সাধারণ ডায়েরিটিকে আমলে নিয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। নিলে আজকের এই ঘটনা ঘটত না।’ 

তিনি এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন, ‘যারা যারা এ হামলা চালিয়েছে এবং যারা পেছন থেকে ইন্ধন যুগিয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও ধর্মীয় সামাজিক পরিচয় যাই হোক না কেন তারা সন্ত্রাসী। কাজেই তাদেরকে বিচারের মুখোমুখী করতে হবে।’


Link copied