পূজামণ্ডপে ‘কোরআন’ নিয়ে ঘোরাঘুরি : পাগল বলে ছেড়ে দিলো পুলিশ
২২ অক্টোবর ২০২৩, ২১:০৪ পিএম
২০২১ সালে কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখার ঘটনায় সারাদেশে যে তাণ্ডব এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন শুরু হয়েছিল , তেমনই আরও একটি ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো হিন্দু সম্প্রদায়।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পূজা মণ্ডপে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কুরআন ব্যাগে নিয়ে সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির সময় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ। পরবর্তীতে অভিযুক্তকে পুলিশের এসআই জসিমের হাতে তুলে দিলেও তদন্ত না করেই ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই মণ্ডপের পূজা উদযাপন পরিষদ।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সোমপাড়া এলাকায় শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দিরের পূজামণ্ডপে এই ঘটনা ঘটে।
সোমপাড়া পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ কান্তি নাথ বলেন, ‘মণ্ডপে প্রবেশ করে দীর্ঘক্ষণ সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির সময় তাকে আমাদের সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আটক করে ব্যাগে কী কী আছে তা দেখি।
তখন তার ব্যাগে তিনটি কোরআন শরীফ ও কিছু জিহাদি বই পাই আমরা। সেগুলোসহ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাকে হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক জসীমের হাতে তুলে দিয়েছি।’
আটকের পর পুলিশের হাতে তুলে দিলেও পরবর্তীতে অভিযুক্তের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর না নিয়ে ‘পাগল’ বলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গোবিন্দ কান্তি নাথ বলেন, “আটকের পর যখন নাম জিজ্ঞেস করেছি তখন চুপ ছিল। বলতেছে ও পাগল। যখন ধরা খায়, তখন সবাই এমন ‘পাগল’ হয়। আমরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। আর পুলিশ তদন্ত না করে, আমাদের কোনো জনপ্রতিনিধিকে না জানিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।”
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাটির ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের হাতে এখন কেউ আটক নেই।’
তিনি বলেন, ‘যদি তাদের (পূজা উদযাপন পরিষদ) অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, যদি ওরা সত্যিই পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে থাকে আর পুলিশের কেউ যদি ছেড়ে দিয়ে থাকে, তাহলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাটি তদন্ত করব। অবশ্যই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ধরণের ঘটনা থেকে বড় বড় ঘটনার সৃষ্টি বলে মন্তব্য চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের শঙ্কায় ফেলে। এগুলো থেকেই বড় বড় ঘটনাগুলো ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছিলেন যে সন্দেহজনক কিছু ঘটলে যেন আমরা জানাই; তারা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাবেন। এখন যদি ওই লোককে ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে তো আর কথা থাকলো না। এটার সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’