বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া : সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

Anweshan Desk

Forhad Hossain Fahad

২০ অক্টোবর ২০২৩, ২১:২৬ পিএম


বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া : সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে অস্বাভাবিক দরে বিক্রি হচ্ছে সবজি। কাঁচকলা ও পেঁপে ছাড়া কোনো সবজি মিলছে না ৮০ টাকার কমে। দামের সেঞ্চুরি পার করেছে কালো গোল বেগুন, শিম, বরবটি, কাকরোল ও গাজর।

ক্রেতারা অভিযোগ, "সবজি আমদানি করতে হয় না, বরং কিছু কিছু রপ্তানিও হয়। এর সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবুও ব্যবসায়ীরা নানা ছুতায় দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন। বাজারে গেলে মাথা ঘোরে, অথচ এদিকে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই।

এদিকে সবজি ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতেই কিছু সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মাঠ পর্যায় থেকে শহরে সবজির সরবরাহে টান পড়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চাহিদার চেয়ে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। ফলে দাম বেড়েছে।

পণ্যের এমন অস্থির দামে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাতিরপুল কাঁচাবাজার থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বেগুন কেনার পর বেসরকারি চাকরিজীবী নুর আলম সমকালকে বলেন, ‘তেল-চিনি আমদানি করা লাগে। সবজি তো দেশেই হয়। তবু কোনো সবজিতে হাত দেওয়া যায় না। অথচ বাজারে সরকারের কোনো নজরদারি নেই।’ তবে সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাম এভাবে বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের মতো আরও কয়েকটি কৃষিপণ্যের দর বেঁধে দেওয়া হবে। যদিও পণ্য তিনটির বেঁধে দেওয়া দর এক মাসের বেশি সময় পরও কার্যকর হয়নি।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কালো গোল বেগুন, বরবটি, শিম, উচ্ছে ও গাজর ১০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে শিমের কেজি ১৫০ থেকে ১৬০, গোল বেগুন ১৪০ থেকে ১৫০, বরবটি ও উচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ এবং গাজর ও কালো লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও এসব সবজি কেনা গেছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঝিঙের কেজি ৮০ থেকে ৮৫ এবং পটোল ৮০ থেকে ৯০, ঢ্যাঁড়সের কেজি ৭০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মুলার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা দেখে ক্রেতার অনেকেরই চোখ যেন কপালে উঠছে। কমের মধ্যে শুধু কাঁচকলার হালি ৪০ টাকা ও পেঁপের কেজি ৪০ টাকায় মিলছে। আর কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।

এদিকে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য চাহিদার তুলনায় জোগানের ঘাটতিকে দায়ী করছেন আড়তদাররা। বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ইমরান মাস্টার বলেন, সপ্তাহ দুয়েক আগেও আড়তে দৈনিক ১০০ মণ সবজি আসত; এখন আসে ৭০ থেকে ৭৫ মণ। এ কারণে দাম বেড়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সবজি কৃষিপণ্য। এর বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কথা কৃষি বিভাগের। তাই সবজির দাম অস্বাভাবিক কেন, তা বলতে পারবে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে কোনো পণ্যের দাম বেঁধে দিলে তা বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিদপ্তর কাজ করবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. নাসরিন সুলতানা বলেন, ইতোমধ্যে তিনটি কৃষিপণ্যের দর বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দাম এমন অস্বাভাবিক থাকলে ভবিষ্যতে অন্য কৃষিপণ্যের দামও বেঁধে দেওয়া হতে পারে।


Link copied