বালিয়াডাঙ্গীতে একযোগে ১৪টি মন্দিরে হামলা ও লুটপাট

Anweshan Desk

Anweshan Desk

০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১৯:৫৯ পিএম


বালিয়াডাঙ্গীতে একযোগে ১৪টি মন্দিরে হামলা ও লুটপাট

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিন্ডি, পাড়িয়া ইউনিয়নের জাউনিয়া এবং চাড়োল ইউনিয়নের সাবাজপুর ও গোয়ালকারি নামক মোট ৪টি গ্রামে একযোগে বড় মন্দির এবং ছোট ধামসহ মোট ১৪টি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এর মধ্যে ধনতলা ইউনিয়নে নয়টি, চাড়োল ইউনিয়নে একটি এবং পাড়িয়া ইউনিয়নে চারটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যানাথ বর্মণ।

শনিবার গভীর থেকে আজ রবিবার ভোর পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে ঘটনাগুলো ঘটে। সকালে এই ঘটনার জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যানাথ বর্মণ বলেন, ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিণ্ডি থেকে টাকাহারা পর্যন্ত একটি হরিবাসর মন্দির, একটি কৃষ্ণ ঠাকুর মন্দির, পাঁচটি মনসা মন্দির, একটি লক্ষ্মী মন্দির ও একটি কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, দেশে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুর করা যেন একটা কালচারে পরিনত হয়েছে। এসব হয়েই যাবে, আমরা দেখেই যাবো। কিন্তু আর কতো? সংখ্যালঘু হওয়াটাই কি আমাদের অপরাধ? বালিয়াডাঙ্গীতে মূলত হিন্দুদের সংখ্যা বেশি। তবুও এই এলাকায় এই ধরনের ঘটনা কিসের জানান দিচ্ছে? এসব হামলাকারীর বিচার কি আদৌ হবে এই দেশে? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে কি আদৌ? অন্যের জানমাল এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠা হামলা করা কি আদৌ নিজের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব বা মহত্ত্ব হতে পারে?

ধনতলা ইউনিয়নের পূজা উদ্‌যাপন কমিটির কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সিন্দুরপিন্ডি মন্দির কমিটির সভাপতি জোর্তিময় সিংহ বলেন, প্রায় অর্ধশত বছর ধরে এ মন্দিরে পূজা করে আসছি। কোনো দিন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এটি একটি চোরাগুপ্ত হামলা। রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা এই হামলা করেছে।  এতে এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তিনি।  

এছাড়াও, মন্দির কমিটি এবং সর্বস্তরের হিন্দু জনগণের পক্ষ থেকে এই হামলার বিচার চেয়ে আগামীকাল একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হবে বলে জানান।

এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১১টায় বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং  জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশে বর্তমান শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।”

“এ ঘটনাটি কে করেছে বা কারা করেছে; এজন্য আমরা অবশ্যই মামলা নেব। সেই সঙ্গে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।"

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

জাতীয় থেকে আরও


Link copied