বোদায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিন্দু প্রধান শিক্ষককে মারধর

Anweshan Desk

জাতীয় ডেস্ক

২২ জুন ২০২২, ১৭:২৮ পিএম


বোদায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিন্দু প্রধান শিক্ষককে মারধর

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিন্দু  ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্ছিত অভিযোগ উঠেছে। 

গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গোবিন্দগুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী তার লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলাই চন্দ্র দাসকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন । 

এ ঘটনায় বোদা থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তারা। 

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনোরঞ্জন বর্মন বলেন, 'আমরা সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এ সময় কয়েকজন লোক নিয়ে এসে লিয়াকত আলী কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রধান শিক্ষককে মারধর শুরু করেন। এখন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। বিদ্যালয়ে এখন আমরা নিরাপদ নই।'

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলে, 'আমাদের সামনেই আমাদের হেড স্যারকে তারা মারধর করেছে। এই দৃশ্য দেখে আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি। তাই আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্যারকে লাঞ্ছিত করার বিচার দাবি করছি।' 

স্থানীয় অধিবাসী সন্তোষ কুমার রায় বলেন, 'একজন শিক্ষকের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না। এ ঘটনায় আমরা পুরো এলাকাবাসী লজ্জিত। আমরা চাই এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।' 

 

স্কুলশিক্ষক ইয়াকুব আলী বলেন, 'সামান্য ১৫ হাজার টাকার কাজ না দেওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী। আমরা কল্পনাই করতে পারছি না যে সামান্য কাজ না দেওয়ায় তিনি শিক্ষককে মারধর করতে পারেন। আমরা এ ঘটনায় পুরো শিক্ষক সমাজ বিস্মিত। আমরা চাই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যেন আর কেউ শিক্ষকদের সাথে এমন আচরণ করার সাহস না পায়।'

 

ভুক্তভোগী শিক্ষক বলাই চন্দ্র দাস বলেন, 'সামান্য এই রঙের কাজ না দেওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির নতুন সদস্য লিয়াকত আলী লোকজন নিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। সবার সামনেই আমাকে মারধর করেছে। আমরা তাদের সন্তানদেরকেই পড়াই। তাদের শিক্ষার ভালো পরিবেশ তৈরির জন্যই কাজ করছিলাম। তাদের কাছে এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করিনি। এ লজ্জা পুরো শিক্ষক সমাজের। আমি বোদা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।'

বোদা থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, 'ওই বিদ্যালয়ের ঘটনায় দুই পক্ষের দুটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখছি।'

 


Link copied