চুয়াডাঙ্গায় কওমি মাদ্রাসায় ৩ ছাত্র বলৎকারের শিকার : ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা
১৮ নভেম্বর ২০২২, ১৬:৩৪ পিএম
চুয়াডাঙ্গার জেলার দামুড়হুদা থানার অন্তর্গত বিষ্ণুপুর দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক আবু সাঈদ কতৃক তিন ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে যার ভিডিও ক্লিপ অন্বেষণ নিউজের হাতে এসেছে। এমনকি ভিকটিম ছাত্রদের মধ্যে একজনের ঠোঁট কামড়ে ছিঁড়ে নিয়েছেন ঐ শিক্ষক।
বিষ্ণুপুর দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে হাউলী গ্রামের আবু সাঈদ বিগত ছয় মাস যাবত শিক্ষকতা করে আসছেন৷ বিগত ১৫ দিন যাবত ঐ শিক্ষক তিন ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন বলে সরাসরি অভিযোগ করেছেন অভিভাবক ও ছাত্ররা। বলৎকারের শিকার ছাত্ররা হলেন বিষ্ণুপুর মাঠপাড়ার সৌদি প্রবাসী মিলনের ছেলে জুবায়ের(৮), কোমলের ছেলে হৃদয়(৯), আব্দুল কাদেরের ছেলে হাবিব(৮)। তারা বিষ্ণুপুর দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
এ বিষয়ে গত তিন দিন আগে জুবায়ের মুখ দিয়ে রক্ত পড়ার সময় বাড়ি গেলে তার মা ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। ঐ ছাত্র বলেন যে, শিক্ষক প্রত্যেকদিন আমাদেরকে টেনেহিঁছড়ে নিয়ে যায় এবং মুখ কামড়ে দেয়। তখন ঐ ছাত্রের মা বিষয়টা কয়েকজনকে জানালে এক পর্যায়ে অন্যান্য ভিকটিমরাও একই অভিযোগ করেন। ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ঐ শিক্ষক মাদ্রাসা কমিটিকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে পালিয়ে যান৷
এ বিষয়ে ছাত্র জুবায়ের বলেন, "আমরা রাতে পড়া শেষ করে ঘুমাই। ভোরে আমাদের টানতে টানতে নিয়ে যায়, মুখ চাটে, কামড়ে আমার ঠোঁট ছিড়ে রক্ত বের করে দেয়। এর আগে আমি একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি হৃদয় কাতরাচ্ছে। ও যত সরে যাচ্ছে তত হুজুর ওকে কোলের মধ্যে টেনে নিচ্ছে।"
অপর ভিকটিম হৃদয় বলেন "আমার সাথে অনেক করেছে। আমি ভয়ে বলতে পারি নি। হুজুর খুব খারাপ। পায়জামা খুলে নিতো।"
অভিভাবকেরা বলেন, আমাদের ছেলেদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা যেন অন্য ছাত্রদের সাথে না ঘটে। ঐ শিক্ষক যেন অন্য কোন মাদ্রাসায় চাকরি করতে না পারেন। আমরা আইনের মাধ্যমে এই ধর্ষণের বিচার চাই। থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।
এলাকাবাসীরা বলেন, এটি একটি ন্যক্কার জনক ঘটনা। ঐ শিক্ষককে কমিটির লোকজন কেন বিচার করলো না। আজ এদের সাথে ঘটেছে কাল অন্য ছেলেদের সাথেও তো ঘটাতে পারে ঐ শিক্ষক। ঐ শিক্ষককে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মাদ্রাসা কমিটির লোকজন বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো নিউজ হবে কি না, ভেবে দেখতে হবে। তুমি (সাংবাদিককে) সকালে দেখা করবা। আমি তোমার সম্পাদকের সাথে কথা বলছি।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।