ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষার্থীকে হত্যা, শিক্ষক গ্রেফতার

Anweshan Desk

জাতীয় ডেস্ক

১৪ অগাস্ট ২০২২, ২২:০১ পিএম


ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষার্থীকে হত্যা, শিক্ষক গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলী এলাকার ইব্রাহিমিয়া তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায় এক শিশু শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে।  রবিবার (১৪ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মাদ্রাসার ভিতর থেকে মোহাম্মদ আলী (১২) নামে ঐ শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 

 

 এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের কাউতলী এলাকার ইব্রাহিমিয়া তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলায় বালক শাখায় প্রতিদিনের মতো রবিবার সহপাঠীদের সঙ্গে পাঠদানে অংশ নেয় হেফজ খানা বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী। শিক্ষকের দেওয়া পড়া মুখস্থ করতে না পারায় বেলা ১১টার দিকে তাকে মারধর করেন শিক্ষক হোসাইন আহমেদ। পরে মাদ্রাসার নিয়মিত কার্যক্রম শেষে দুপুর সোয়া ২টার দিকে খাবার বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর মোহাম্মদ আলীর লাশ মাদ্রাসার শৌচাগারে দেখে সহপাঠীরা। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। সে সময় মৃতের স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, নির্যাতন করেই ওই শিশু শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে।

কাউতলী এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল হাসান বলেন, ‘কেউ যদি ফাঁস দেয় তাহলে সে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। কিন্তু আমরা যখন এখানে আসি তখন ওই শিক্ষার্থীর পা মেঝেতে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। পরে আমরা তার লাশ বাথরুম থেকে উদ্ধার করি। এটি আত্মহত্যা হতে পারে না। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।’

মৃত শিশুর বাবা কাউসার মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন দুপুরে আমার ছেলে বাড়িতে ভাত খেতে যায়। কিন্তু আজ দুপুরে বাড়িতে না যাওয়ার কারণে আমি মাদ্রাসায় আসি। পরে এখানে হুজুরের কাছে জানতে চাইলে তারা আমাকে তাদের অফিস রুমে দীর্ঘ সময় বসিয়ে রাখেন। পরে তাদের কাছে আবারও জানতে চাইলে তারা আমাকে জানান, আমার ছেলে বাথরুমে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এরপর আমরা বাথরুমে গিয়ে দেথি তার পা মাটিতে লাগানো এবং গলায় একটি গামছা দেওয়া আছে। পরে বাথরুমে দরজা ভেঙে আমরা তার লাশ উদ্ধার করি। ওপর দিয়ে ওই বাথরুমে যাওয়ার  সুযোগ রয়েছে। দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় সে কেন গলায় ফাঁস দেবে? কেউ না কেউ এখানে ঘটনা ঘটিয়েছে। ছেলের সঙ্গে আমার কোনও মনোমালিন্য ছিল না। গতকাল রাতে তার খাবার দিয়ে গেছি। আজ সকালে নাস্তাও দিয়ে গেছি আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসার শিক্ষক ছেলেকে কী ধরনের শাসন করেছেন সেটি তিনি ভালো বলতে পারবেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমিসহ আমাদের টিম ঘটনাস্থলে এসে বিস্তারিত জেনেছি। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শিক্ষক হোসাইন আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যার পর তাকে ঝুলানো হয়েছে সেটি ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। পরবর্তী সময়ে অভিযোগের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


Link copied