ফেসবুকে ভুয়া পরিচয়ে ২১১ নারীর সঙ্গে প্রতারণা : মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

Anweshan Desk

ডেস্ক রিপোর্ট

০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:২৬ পিএম


ফেসবুকে ভুয়া পরিচয়ে ২১১ নারীর সঙ্গে প্রতারণা : মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

ছবি : গ্রেফতার প্রতারক মো: সোহাইল

ফেসবুকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে ভুয়া আইডি খুলে  ২১১ নারীর সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মো. সোহাইল (২৭) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল রোববার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার সোহাইল ভোলার দৌলতখান উপজেলার মাওলানা বাড়ির মো. সালাউদ্দিনের ছেলে। তিনি শেরপুরের নড়িয়া উপজেলার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। গ্রেপ্তারকালে তাঁর কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কোম্পানির ১২টি সিম কার্ড, চারটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। সেই সব মোবাইল ফোনে অসংখ্য নারীর আপত্তিকর ছবি, নগ্ন ভিডিও ও স্ক্রিনশট রয়েছে।

এপিবিএন-১২ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেনাবাহিনীর মেজর, পুলিশ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে ফেসবুকে আইডি খুলে মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেন। তিনি মূলত মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথা বলে রেকর্ড করে রাখতেন। পরে সেই কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা নিতেন। কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সময় কেউ সন্দেহ করলে তাঁকে ব্লক করে দিতেন সোহাইল। 

এপিবিএনের পরিদর্শক এস এম মাহমুদুর রহমান জানান, সোহাইল ৫০টিরও বেশি ম্যারেজ মিডিয়ায় নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। পরে যোগাযোগকারী নারীদের সঙ্গে কথাবার্তার একপর্যায়ে সরলতার সুযোগ নিয়ে তাঁদের গোপন ছবি, ভিডিও নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন। এমন প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের ২৫ অক্টোবর ডিএমপির সবুজবাগ থানায় একই ধরনের প্রতারণার অভিযোগে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে একই ধরনের প্রতারণা করেন।

গ্রেপ্তার ভুয়া মেজরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি ২০২১ সাল থেকে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন। পরবর্তীতে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অফিসারের ছবি সংগ্রহ করে তাঁর আইডিতে নিয়মিত পোস্ট করতেন। সেই সঙ্গে তরুণীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন। এছাড়াও তিনি নানা বাহানা দিয়ে কৌশলে বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে টাকা আদায় করতেন।

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিদর্শক মাহমুদুর বলেন, সোহাইল নিজেকে এমন ভাব দেখাতেন যে তিনি কোটিপতি। তাঁর মা আমেরিকার ডাক্তার ও সিটিজেন। একজন নারীর নামের আগে ডাক্তার লিখে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে তিনি নিজেই মা সাজতেন। পরে ওই আইডি থেকেও মেজর ছেলের জন্য পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। তারপর আগ্রহীদের ছেলের আইডি ও ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলতেন।

এছাড়াও তিনি কোনো এক অপারেশনে তাঁর অনেক সহকর্মী আহত হয়েছে, তাঁদের চিকিৎসা করাতে টাকা লাগবে বলে নারীদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এছাড়াও বহুতল বাড়ির ছবি দিয়ে বলতেন, বাড়ির কাজ চলছে কিন্তু ভুলে মানিব্যাগ ফেলে এসেছেন, লেবারদের বেতন দিতে হবে, টাকা নেই। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার নাম করে টাকা ধার নিয়েও আত্মসাৎ করতেন বলেও জানিয়েছেন এপিবিএনের এই কর্মকর্তা।

 

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন থেকে আরও


Link copied