কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে পুলিশের বাধা, যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা

Anweshan Desk

Forhad Hossain Fahad

১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৫০ পিএম


কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে পুলিশের বাধা, যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা

ছবি : ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলা ও ধাওয়া

কুমিল্লা শহরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে সরকার সমর্থক যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এতে একজনের মাথা ফেটে যাওয়াসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঐক্য পরিষদের নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগও করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত

সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জের মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের ‘সাম্প্রদায়িক গালিগালাজ’, কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনের ‘দুর্গাপূজাকে কটাক্ষ করে মন্তব্য’, কুড়িগ্রামের চারণ কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা এবং বিভিন্ন জায়গায় পূজার প্রাক্কালে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে এ প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

ছবি : ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন 

অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে নগরীর রামঘাট দলীয় কার্যালয় থেকে 'শান্তি মিছিল' বের করে কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ। সদর আসনের সংসদ সদস্য বাহারের অনুসারী মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শহীদ এতে নেতৃত্ব দেন। 

ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর কান্দিরপাড়ের দিকে রওনা দেয়। মিছিলটি রানীর বাজার সড়কের কর ভবন এলাকায় এলে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়। তখন তারা সেখানেই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। 

অপরদিকে যুবলীগের শান্তি মিছিল রানীর বাজার সড়কে এলে পুলিশ তাদের ফরিদা বিদ্যায়তন স্কুলের সামনে থামিয়ে দেয়। পরে তারাও সংসদ সদস্য বাহারের পক্ষে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে।

রানীর বাজারে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি শ্লোগানের একপর্যায়ে যুবলীগের মিছিল থেকে ঐক্য পরিষদের মিছিলকে লক্ষ্য করে ধাওয়া দেওয়া হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসমশ যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শহীদ নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে ঐক্য পরিষদের মিছিলে ধাওয়া দেয় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাপস বকশী বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের মিছিলে ধাওয়া করে হামলা চালায়। এতে এক নারীসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এমপি বাহার দুর্গাপূজায় মদ খাওয়া নিয়ে কটূক্তি করায় আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ করতে গিয়ে এ হামলার শিকার হই।

তবে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, “মূলত সংঘাত এড়াতে পুলিশ মিছিলটিকে কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে যেতে দেইনি। কারণ কান্দিরপাড়ে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। আকস্মিক তারা মিছিল নিয়ে এসে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করেন। পরে আমরা পরিস্থিতি সামাল দিই। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এদিকে হামলায় আহতদের দেখতে তাদের বাসায় গিয়েছেন জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান এবং জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তারা।

পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবদুল আজিজ সিহানুকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা রিসিভ করেননি।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন থেকে আরও


Link copied