জামিনাদেশ পৌঁছানোর পরও খাদিজার মুক্তিতে বিলম্ব : ব্যাখ্যা চায় আপিল বিভাগ

Anweshan Desk

Anweshan Desk

২০ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:০৭ পিএম


জামিনাদেশ পৌঁছানোর পরও খাদিজার মুক্তিতে বিলম্ব : ব্যাখ্যা চায় আপিল বিভাগ

সর্বোচ্চ আদালতে থেকে পাওয়া জামিনাদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পরও কেন কারাগার থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি পেতে বিলম্ব হয়েছে- রাষ্ট্রপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

খাদিজার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনলে এ নির্দেশ দেন আদালত। 

এর আগে বৃহস্পতিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জামিন আদেশ পান খাদিজাতুল কুবরা। রোববার তার জামিনের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। পরে আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খাদিজা। গ্রেপ্তারের এক বছর দুই মাস ২৪ দিন পর তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হলেন।

খাদিজার মুক্তির জন্য রোববার সারাদিন তার পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে অপেক্ষা করেন। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত খাদিজা মুক্তি না পাওয়ায় তাকে ছাড়াই তারা ফিরে যান।

এ বিষয়ে খাদিজার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে খাদিজাকে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল। তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এটা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননা।’

সোমবার সকাল ৯টায় কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে খাদিজা মুক্তি পান বলে জানান তার বোন সিরাজুম মনিরা। তিনি বলেন, ‘খুব সকালে আমরা কারাগারে আসি। তারপর সকাল ৯টায় খাদিজাকে মুক্তি দেয়। খাদিজার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু আজ থেকে। এজন্যই খুব সকালে আসা। চেষ্টা করব যেন এ্যাটেন্ড করা যায়।’

খাদিজার জাতীয় পরিচয়পত্র ও একাডেমিক কাগজপত্রে বয়স ১৭ বছর কিন্তু তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে ২০২০ সালের ১১ ও ১৯ অক্টোবর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ দুটি মামলা করে। এর দুই বছর পর মামলার অভিযোগপত্র তৈরি হলে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর মেজর দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক ভিডিও দেখতে পান। সেখানে সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ বৈধ গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।

এতে আরও দেখা যায়, সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর দেলোয়ার তাদের ইউটিউব চ্যানেল এবং ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজগুলোতে উল্লিখিত ভিডিওগুলো আপলোড করে বাংলাদেশে চলমান স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা তাদের মিথ্যা তথ্যপূর্ণ আলোচনা ইউটিউব, ফেসবুকে প্রচার করে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে তাদের সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া তারা উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচারের মাধ্যমে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ন করছে। এটা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারার অপরাধ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

২০২২ সালে এই দুই মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে পুলিশ। পরে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর সঞ্চালক খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মেজর দেলোয়ার এখনও বিদেশে অবস্থান করছেন। 

মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে আরও


Link copied