হামলার পূর্বে গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের ঘর ছাড়তে বললো ইজরায়েল

Anweshan Desk

Anweshan Desk

০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:১৬ পিএম


হামলার পূর্বে গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের ঘর ছাড়তে বললো ইজরায়েল

হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করার পূর্বে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে ইজরায়েলের সেনাবাহিনী। খবর বিবিসির। 

গাজা উপত্যকার সাতটি ভিন্ন ভিন্ন এলাকার নাগরিকদের নিজেদের ঘর থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইজরায়েলের সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে যে সেসব এলাকায় হামাসের ঘাঁটি রযেছে, সেখানে নতুন হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে তারা।

ইজরায়েলের পক্ষ থেকে হামলার সতর্কতা আসার পর গাজার নাগরিকদের অনেকে এরই মধ্যে তাদের ঘর ছেড়ে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নেয়া শুরু করেছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সংঘাতের সূত্রপাত

গত শনিবার ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব ‘সিমচাট তোরাহ’ উদযাপন করতে ইসরায়েলে সরকারি ছুটি ছিল। কিন্তু উৎসব আয়োজন তো দূরে থাক বরং এদিন ভোরবেলা ইজরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের আকস্মিক রকেট হামলায় উৎসবের দিনে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো। ঘুমের ঘোরেই সেখানকার বাসিন্দারা গাজা স্ট্রিপ থেকে ছোড়া একের পর এক রকেটের প্রচণ্ড বিস্ফোরণ আর সাইরেনের তীব্র আওয়াজের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটেন।

হামাস যোদ্ধারা শুধু হাজার হাজার রকেট ছুড়েই ক্ষান্ত হয়নি। বরং ইজরায়েলের অত্যন্ত সুরক্ষিত সীমান্ত পেরিয়ে কাছের শহর এসদেরত, সীমান্তের কাছে বসবাস করা কমিউনিটি বে’রি এবং ওফাকিম শহরে রীতিমত গণহত্যা চালায় বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর। এসদেরতে সড়কে, গাড়ির ভেতর, বাড়ির পাশে বা উঠানে বহু মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। হামাসের এই আকস্মিক হামলায় প্রায় ২০০ জন ইজরায়েলি নিহত হয়েছে। 

ইজরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের এসদেরত নগরীতে ঢুকে হামাস যোদ্ধারা সাধারণ মানুষের উপর গণহত্যা চালায়।|ছবি: রয়টার্স

এতে প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সবশেষ ভিডিও বার্তায় বলেছেন যে তাদের ‘শত্রুকে এর চূড়ান্ত মূল্য দিতে হবে, যা তাদের আগে কখনো দিতে হয়নি।’

এরপরই ইজরায়েলি সেনাবাহিনী হামাসের ঘাঁটিকে উদ্দেশ্য করে প্যালেস্টাইনের গাজা স্ট্রিপে পাল্টা হামলা শুরু করে এবং এতে ২৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যম এক্স’এ (পূর্বনাম টুইটার) পোস্ট করা এক ভিডিওতে বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি।’ঐ ভিডিওতে 'ফিলিস্তিনের জঙ্গিদের' বিরুদ্ধে ‘ভয়াবহ প্রতিশোধ’ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মি. নেতানিয়াহু।

এদিকে হামাসের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন যে ইজরায়েলে আকস্মিক হামলা করার পেছনে তাদের সহযোগী ইরানের সহায়তা রয়েছে।

আকস্মিক হামলার কারণ হিসেবে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি আল-জাজিরাকে বলেছেন, দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। খালেদ বলেন, পাশাপাশি যেসব আরব দেশ ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক করছে তাদের হুশিয়ারি দেয়াও হামাসের এই অভিযানের কারণ।’

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের হামাস বাহিনীকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইজরায়েলের সেনাপ্রধান। তাঁর হুঁশিয়ারি, নরকের দ্বার খুলে ফেলেছে হামাস। এ বিষয়ে ইজরায়েলের সেনা প্রধান মেজর জেনারাল ঘাসান অ্যালিয়েন বলেছেন, “আমি একটা কথা বলতে চাই- গাজা স্ট্রিপে নরকের দ্বার খুলে ফেলেছে হামাস। হামাস সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর দায় এবং পরিণাম হামাসকে ভোগ করতেই হবে।”

এখন পর্যন্ত হওয়া সংঘর্ষে দুই দিকে প্রায় ৫০০ মানুষ মারা গেছে বলে জানা গেছে।

 

 

 

মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে আরও


Link copied