মঠবাড়িয়ায় মোহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির গুজব, হিন্দু শিক্ষককে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র তৌহীদি জনতার

Anweshan Desk

মত প্রকাশের স্বাধীনতা ডেস্ক

২২ জুন ২০২২, ২২:৫২ পিএম


মঠবাড়িয়ায় মোহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির গুজব, হিন্দু শিক্ষককে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র তৌহীদি জনতার

নবী মোহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির গুজব ছড়িয়ে এবার পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক হিন্দু প্রধান শিক্ষককে হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার ষড়যন্ত্রে মাঠে নেমেছে উগ্রপন্থী তৌহিদী জনতা। ভিক্টিম শিক্ষক অশোক কুমার স্বর্ণকার উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের দধিভাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

 

 শিক্ষক অশোক কুমারের অপসারণ ও ফাঁসীর দাবীতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিকে দধিভাঙ্গা বাজারে তৌহিদী জনতার ব্যানারে মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে স্থানীয় উগ্রপন্থী- ধর্মান্ধ মুসলমানদের একটি চক্র। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,  গত ১৪ জুন মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে এক বৈঠকে শিক্ষক অশোক কুমার ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মোহাম্মদকে নিয়ে  কটুক্তি করেছেন বলে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয়দের মাঝে গুজব ছড়ানো হয়। তৌহিদ নেওয়াজ তারিক নামের একজন জামাত নেতা এই গুজবের মূল মাস্টারমাইন্ড বলে স্থানীয় আরেকটি সূত্র জানিয়েছে। নবী অবমাননার গুজবের ফলে স্থানীয় ধর্মান্ধদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। উত্তেজিত ধর্মান্ধ ও উগ্রপন্থীরা মিলিত হয়ে তৌহীদি জনতার ব্যানারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়  শিক্ষক অশোক কুমারের অপসারণ ও ফাঁসীর দাবীতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হাফেজ মো. মিজান, সিয়াম খান ও লাভলু সিকদার কয়েকজন উগ্রপন্থী। সমাবেশ থেকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দেয়া হয়।

পরে থানা অফিসার ইনচার্জ মুহা. নরুল ইসলাম বাদল ও টিকিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রিপন জমাদ্দার উপস্থিত হয়ে অশোক কুমার স্বর্ণকারের উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে  উত্তেজিত তৌহিদী জনতাকে শান্ত করেন।

উল্লেখ্য,  'তৌহিদী জনতা' নামে কোন নিবন্ধিত বা অনুমোদিত দল বা সংগঠনের অস্ত্বিত নেই।  ইসলাম ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মানুভুতিতে আঘাতের গুজব ছড়িয়ে  উগ্রপন্থী ও ধর্মান্ধ মুসলমানদের একটি  গোষ্ঠী  'তৌহিদী জনতার' নামে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সরকার ও প্রশাসন তৌহিদী জনতার রাষ্ট্র ও বিরোধী ও সংবিধান বিরোধী কর্মকান্ডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে না। ফলে এদের  দৌরাত্ম্য দিনে দিনে বেড়ে চলছে।

 

 

মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে আরও


Link copied