ভৈরবের সেই হিন্দু নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, এমডি সুমন গ্রেফতার

Anweshan Desk

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন ডেস্ক

১৩ জুলাই ২০২২, ১৬:৫৪ পিএম


ভৈরবের সেই হিন্দু নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, এমডি সুমন গ্রেফতার

এমডি হানিফুর রহমান সুমন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হাসপাতাল কক্ষে রিমা প্রামাণিক (১৮) নামে এক হিন্দু নার্সের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হানিফুর রহমান সুমনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) নিহত রিমার বাবা সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিক বাদি হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এর আগে সোমবার (১১ জুলাই) এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। মামলার আসামিরা হলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন (৩৫) ও নার্স লিজাসহ (২৪) অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন।

এর আগে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ভোর ৩টায় হাসপাতালের এমডি হানিফুর রহমান সুমনকে পুলিশ বাসা থেকে আটক করে। পুলিশ বলেছিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। কিন্তু দুপুরে মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নার্স রিমা প্রামাণিক দুই বছর যাবত ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড আর্থোপেডিক সেন্টারে চাকরি করতেন। ঈদের তিন দিন আগে তিনি ছুটি নিয়ে তার বাবার বাড়ি রায়পুরার পিরিজকান্দি গ্রামে চলে যান। শনিবার (৯ জুলাই) ঈদের আগের দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন দিয়ে ঈদের দিন ডিউটি করতে তাকে হাসপাতালে আসতে বলে। ঈদের দিন ডিউটি করে তিনি পাশের ভবনের পঞ্চম তলায় নার্সদের থাকার রুমে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন।

এজাহারে বলা হয়, রোববার (১০ জুলাই) ঈদের রাতে কোনো এক সময় হাসপাতালের কয়েকজন মিলে তাকে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করে। পরে ভোরে নিহতের বাবাকে জানানো হয় তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার সকালে পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সকাল ৮টায় মরদহে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

নিহত নার্স রিমার বাবা সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, আমার মেয়ে ঈদের আগে ছুটিতে বাড়িতে আসে। শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন দিয়ে হাসপাতালে ডিউটি করতে বলে। ঈদের দিন ডিউটি করল আমার মেয়ে কিন্তু রাত সাড়ে ৪টায় ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমরা সোমবার ভোরে হাসপাতালে এসে দেখি রিমার মরদেহ হাসপাতালের নিচের কক্ষে শোয়ানো রয়েছে। সে আত্মহত্যা করলে তার মরদেহ ৫ তলার শয়ন কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকত। তার মরদেহ রুম থেকে বের করা হলো কেন?

তিনি বলেন, পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে আমার মেয়ের যৌনাঙ্গে রক্তের দাগ রয়েছে। তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে গলাটিপে হত্যা করেছেন। আমি সোমবার না বুঝে অপমৃত্যুর মামলা করেছিলাম। মঙ্গলবার হত্যা মামলা করেছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বলা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা থানায় দুজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। হাসপাতালের এমডি সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন থেকে আরও


Link copied