ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অজুহাতে কলেজ শিক্ষক গ্রেফতার

Anweshan Desk

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন ডেস্ক

১৯ জুন ২০২২, ০৩:২৮ এএম


ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অজুহাতে কলেজ শিক্ষক গ্রেফতার

সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ মিঞা

ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে নওগাঁয় এক কলেজ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৬ জুন  বৃহস্পতিবার রাতে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঁঠালতলী এলাকায় নিজ বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

 গ্রেফতার আবদুর রউফ  মিঞা নওগাঁর রানীনগর মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।  

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের বরাত দিয়ে ঢাকা ট্রিবিউন জানিয়েছে, গত ১৪ জুন সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ মিঞা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি কবিতা পোস্ট করেন। ওই কবিতায় কোরআন অবমাননা ও  ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মহাম্মদকে  নিয়ে কটূক্তি করা হয় বলে অভিযোগ তোলে স্থানীয় একটি ধর্মান্ধ গোষ্ঠী।

 পরবর্তীতে এ অভিযোগের বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে স্থানীয় সাধারণ মুসলমানদের উসকিয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানায়। 

এরপর, বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর থেকে তৌহীদী জনতার ব্যানারে উগ্রপন্থীদের চক্রটি ফাঁসির দাবিতে কলেজে প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যে বিকেল ৩টার দিকে সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ মিঞাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরপর অবস্থানরত জনতা কলেজ প্রাঙ্গন ত্যাগ করে। 

উগ্রপন্থীদের শান্ত করতে একইদিন সন্ধ্যায় শিক্ষক আব্দুর রউফ মিঞাকে  নিজ বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।  

 কারণ দর্শানো নোটিশ সম্পর্কে কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম জানান, “কোরআন অবমাননা ও রাসুলকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করায় আব্দুর রউফ মিঞাকে বৃহস্পতিবার শোকজ করা হয়। শোকজের কপি তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।”

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজের সভাপতি শাহাদাত হুসেইন বলেন, “কটূক্তির ঘটনাটি জানাজানি হলে অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে শোকজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রউফ মিঞা বলেন, “আমি কবিতা লেখেছি। কাউকে নিয়ে কটূক্তি করিনি।” কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়ে তিনি জানা, “শোকজের কোনো কপি আমি পাইনি। এ বিষয়ে আমি জানি না।”

 উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে অধ্যাপক আব্দুর রউফ মিঞা সপরিবারে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করার কারণে স্থানীয় ধর্মান্ধদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।

 

ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন থেকে আরও


Link copied