মাদ্রাসার বাথরুমে শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ : মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়দের প্রতিবাদ

Anweshan Desk

Anweshan Desk

০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৪১ পিএম


মাদ্রাসার বাথরুমে শিশুর ঝুলন্ত মরদেহ : মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়দের প্রতিবাদ

নরসিংদীর মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মাদরাসাছাত্রী মাইশা হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও মিছিল করেছেন স্থানীয়রা।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মানববন্ধন ও মিছিল করেন তারা। এ সময় মানববন্ধন থেকে শিশু মাইশা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এর আগে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) মাইশার বাবা বাদী হয়ে মাধবদী থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহত মাইশা (৯) ভগিরথপুর গ্রামের মো. নেছার উদ্দিনের মেয়ে। তিনি কুড়েরপাড় জামিয়া কওমিয়া মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

মানববন্ধনে স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই মাদরাসার তৃতীয় তলার বাথরুম থেকে মাইশার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মাইশা থাকত দ্বিতীয় তলায়। এ ঘটনার পর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মাইশাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। গত ১৯ অক্টোবর একইরকমভাবে মাদরাসার তৃতীয় তলার বাথরুম থেকে ফাজিল প্রথম বর্ষের ছাত্রী আফরিনের (১৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পরিবার বলছে, নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

তাছাড়া, মাদ্রাসা কতৃপক্ষের এই আত্মহত্যাকে সাজানো নাটক বলে মনে করেন স্থানীয় অনেকেই। তাদের দাবি শিশু মাইশাকে নির্যাতন বা ধর্ষণ করে হত্যা করে সেটার দায় থেকে বাঁচতে এই নাটক সাজানো হয়েছে। মাদ্রাসা কতৃপক্ষের প্রতি তারা কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন এবং তা হলো :

 

১. একটা ১০ বছরের বাচ্চার তো প্রজাপতির মতো হেসে খেলে উড়ে বেড়ানোর কথা। শিশুটি তো মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী। তার মাথায় এই শিশু বয়সেই মৃত্যু চিন্তা এলো কেন?

২. একটা ১০ বছরের বাচ্চার তো আত্মহত্যা কী, কীভাবে করে, কোথায় করতে হয় এইসব জানার কথা না! তাই না ?

৩. শিশুটি যদি আত্মহত্যা করেই থাকে তার ঠোঁট, কপাল, পিঠ ইত্যাদি জায়গায় ক্ষত এবং আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেল কেন?

৪. এত্তো এত্তো বাচ্চার মধ্যে একটা বাচ্চা দিনে দুপুরে আত্মহত্যা করে কী করে?

৫. ৩ তলায় থাকা একটা শিশু ৪ তলায় গিয়ে মরতে গেল কেন?

 

তারা বলেন, কোন প্রকার ধানাইপানাই নয়, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। অপরাধী যেই হউক তার শাস্তি চাই।

এদিকে, মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুজ্জামান জানান, মাইশার বাবার দেওয়া অভিযোগটি আমরা আমলে নিয়ে মামলায় নথিভুক্ত করেছি। তদন্ত চলছে।

এ সময় মানববন্ধনে মাধবদী ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি আল আমিন ভূঁইয়া, ইউপি সদস্য আতাউর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য বেলায়েত হোসেন বিল্লাল, যুব জাগরণ সংস্থার সভাপতি হারুন অর রশিদ হৃদয়, মাধবদী কালচারাল ক্লাব, ভগিরথপুর ওয়ান ক্লাব, সচেতন নাগরিক কমিটি, ব্লাড ডোনার ক্লাব, এফ ৫১ ক্লাব, আমরা সেচ্ছাসেবী সংগঠন মাধবদী থানা শাখা, সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।


Link copied